চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া আনোয়ারায় যোগদান করার পর থেকে শিক্ষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করে সরকারি পাওনা থেকে মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্য করে আসছে।
গত আর্থিক বছরে উপজেলার ২শ জন শিক্ষক থেকে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা বিপরীতে প্রতিজন ১ হাজার টাকা করে ইউনিয়ন প্রতিনিধির মাধ্যমে আদায় করে।উল্লেখ থাকে যে, সরেজমিনে গিয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করার নিয়ম থাকলেও তিনি প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে অফিসে পরিদর্শন বহি এনে পরিদর্শন খাতায় লিখে বিদ্যালয় পরিদর্শন দেখিয়ে টিএ বিল গ্রহন করতেন।গত অর্থ বছরে টিএ বিল বেশি নেওয়ায় চালানের মাধ্যমে সরকার কোষাগারে ৫ হাজার টাকা ফেরত দেন।গত বছর ও এ বছর আন্ত: বিদ্যালয় বদলী বানিজ্যে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি গত ৫ই আগস্টের পূর্বে বলতেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার খালু।বর্তমানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন জামায়াত আমীর ডাঃ সফিকুর রহমান তার আত্মীয়।
বিদ্যালয় পরিদর্শনে না গিয়ে ভূয়া টিএ বিল গ্রহন করে আবার জুন’২৫ সালে চালানের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেন।তিনি গত মার্চ ‘২৫ সালে আনোয়ারা উপজেলায় কর্মরত প্রায় ৭শত শিক্ষকের চাকুরী বহি হালনাগাদ করে দেওয়ার নামে প্রতি শিক্ষক থেকে ৮০/- টাকা করে ৫৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেনিফিটের কাগজপত্রে দস্তখত করতে প্রতি শিক্ষক থেকে ৫০/৬০ হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহন করে।টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বা উৎকোচ কম দিতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত সনাতন ধর্মাবলম্বী বাবু স্বপন কান্তি দাশকে নামাজ পড়ার জন্য ১ টি জায়নামাজ,১ টি টুপি,১ টি পান্জাবী ও পায়জামার কাপড় এবং টুপি না আনলে তার বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।তারপর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবু স্বপন কান্তি দাশ শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া’র চাহিদামতো ক্রয় করে তাকে দিলে ঐ শিক্ষা অফিসার ঐ শিক্ষকের বিলে স্বাক্ষর করেন, তিনি এমন দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার। ঐ শিক্ষা অফিসার ভূয়া বিল ভাউচার করে আনোয়ারা শিক্ষা অফিসের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন যাহা সরকারিভাবে অডিট করলে তার সত্যতা পাওয়া যাবে।গুটিকয়েক দালাল শিক্ষক ও ১ জন দপ্তরীর মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছ থেকে স্লিপ ফান্ড,রুটিন মেনটেইন্স,প্রধান শিক্ষকদের টিএ বিল,কন্টিনেন্সি বিল,শিক্ষকদের বকেয়া বিল,ক্ষুদ্র মেরামত এমনকি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হুইল চেয়ার ও চশমা বিতরণের কমিটি করার কথা থাকলেও ঐ দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার কমিটি না করে ভূয়া বিল ভাউচার তৈরি করে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান না করে সরকারি আইন ও প্রশাসনকে অমান্য করে উৎকোচের টাকা তোলার জন্য প্রতি ইউনিয়ন থেকে ১ জন করে ইউনিয়ন প্রতিনিধি পদ সৃষ্টি করে।দূর্নীতিবাজ ঐ শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়া প্রতি শিক্ষক থেকে
৫ শত টাকা করে উৎকোচ নিয়ে দপ্তরী নাজিমের মাধ্যমে শিক্ষকদের সার্ভিস বহি ফটোকপি করে শিক্ষকদের বিতরন করে।তিনি সাংবাদিকদের অবমূল্যায়ন করার নজিরও আছে।স্থানীয় সাংবাদিক কোন তথ্য চাইলে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং সাংবাদিকের অবর্তমানে গুটিকয়েক দালাল শিক্ষকদের কাছে ঐ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে।কয়েকমাস আগে একজন বিসিএস ক্যাডারও দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়ার কাছে হেনস্তা হওয়ার কথা আনোয়ারার আপামর জনসাধারণের কাছে জানা আছে।উল্লেখ্য
মে ‘২৪ সালে ডুমুরিয়া রুদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্যের অভিযোগ তদন্ত না করে তাকে জেল খাটিয়ে
চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার কূটকৌশল এই দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসারই করে দেয়।এ ব্যাপারে শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক,প্রশাসন-১, মোঃ সাজ্জাদ হোসেন এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন- দূর্নীতি,ঘুষ বানিজ্য, অনিয়ম,সরকারি টাকা আত্মসাৎ ও পরে রাস্ট্রীয় কোষাগারে চালানের মাধ্যমে সামান্য ফেরৎ দেওয়া ইত্যাদির অভিযোগ তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আনোয়ারা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুর রহমান ভূঁইয়াকে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক বদলী করা হয়।