মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার, দৈনিক আজাদী এবং গণতন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা
দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, বাঙালী মুসলমানদের নব জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের ৬৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর (২০২৫) বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে ‘‘মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার, দৈনিক আজাদী এবং গণতন্ত্র’’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক এস.এম. জামাল উদ্দিন এতে সভাপতিত্ব করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জননেতা ডা. শাহাদাত হোসেন। উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব বিশিষ্ট সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি। মুখ্য আলোচক ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন অব প্রেস কাউন্সিল নির্বাহী পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক সদস্য মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত। বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় সেমিনারের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন শেখ ফরমান উল্লাহ চৌধুরী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক এস.এম. জামাল উদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস্ কমিশনের প্রেসিডেন্ট রাজনীতিবিদ এম. এ হাশেম রাজু, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার জাবেদ আবছার চৌধুরী, কোহিনুর ইলেকট্রিক প্রেসের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আলহাজ্ব মোহাম্মদ লোকমান হাকিম, সাংবাদিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, কবি আসিফ ইকবাল, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা তারিকুল ইসলাম ফয়সাল, এস.এম. সিরাজদৌল্লা চৌধুরী, মহানগর বিএনপি নেতা আবু মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, মানবাধিকার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ আইয়ুব আলী, শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ন্যাপ নেতা অজিত দাশ, বাংলাদেশ সরকারের কর্মচারি সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল তারেক, মানবাধিকার কর্মী এম.এইচ. সোহেল প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার, দৈনিক আজাদী এবং গণতন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা। চট্টগ্রামের সংবাদপত্র শিল্প, মুদ্রণ ও প্রকাশনা জগতে মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের অবদান ঐতিহাসিক। মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার চট্টগ্রামের সাংবাাদিকতার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, সর্বোপরি ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্রের পথকে সুগম করতে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদী অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছেন- যা অবশ্যই স্মরণযোগ্য। মোহাম্মদ আবদুল খালেদ ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের চরিত্রকে অনুসরণ করলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক এস.এম. জামাল উদ্দিন বলেন, ব্যক্তি জীবনে অত্যন্ত সৎ ও ধর্মপ্রাণ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারকে কোন প্রকার সংকীর্ণতা ও একদেশদর্শীতা কোনদিন স্পর্শ করতে পারেনি। ধর্মপ্রাণ মানুষদেরকে একটু অবজ্ঞার চোখে দেখে পশ্চাদপদ ভাববার বাতিকগ্রস্থ ও বিভ্রান্ত শ্রেণীর মেকি প্রগতিবাদীরা মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের জীবন, রীতি, আচরণ, বিশ্বাস ও আদর্শ নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করলে নিজেদের ভ্রান্তি বিচার বুদ্ধির অসম্পূর্ণতা ও অপরিণত মানসিক স্বাস্থ্য বুদ্ধিভিত্তিক চিকিৎসার অবকাশ পাবেন। আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের মধ্যে ধর্ম ও প্রগতির সুষম সমন্বয় তাঁকে এক অনবদ্য আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি অভিমত প্রকাশ করে বলেন, আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের জীবন চরিত্র চর্চা করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে। উদ্বোধনী বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জনগণ ও রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি চট্টগ্রামের প্রাচীনতম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী ও অন্যান্য সংবাদপত্রগুলো সূদুরপ্রসারী ভূমিকা পালন করেছে। মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের অবদান জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, যাঁদের জীবনাদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করত, যাঁদের ত্যাগ, ব্যক্তিত্ব, সম্ভ্রম ও সমীহের কারণ ছিল তাঁরা সকলেই অন্তহিত। কেউ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, কেউ বিভিন্ন কারণে দিকবালচক্রে হারিয়ে গেছেন। তাঁদের সহযোগিতা থেকে আজ আমরা বঞ্চিত। আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের জীবনাদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করত, এখনো করে। তিনি বলেন, সর্বগুণে গুণান্বিত এক অসাধারণ মানুষ মোহাম্মদ আবদুল খালেক ইঞ্জিনিয়ার।